রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন

মার্চে সংলাপে বসছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র

মার্চে সংলাপে বসছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র

স্বদেশ ডেস্ক:

র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুরি হলেও দেশটির সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখবে বাংলাদেশ। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে নিজেদের হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানালেও সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সামনের দিনগুলোতে যোগাযোগ ও সহযোগিতার সম্পর্ক আরও বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ। এমন বাস্তবতায় আগামী মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পার্টনারশিপ ডায়ালগে বসছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেন সরকার গঠিত হওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। যেখানে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের অংশে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। ট্রাম্পপরবর্তী মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে এটি প্রথম কোনো বড় বৈঠক। সন্ত্রাসবাদ দমন, মানবাধিকার, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিসহ স¤প্রতি র‌্যাব কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও আলোচিত হবে। এছাড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে আলোচনা হবার কথা রয়েছে।

দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার সর্বোচ্চ ফোরাম ‘পার্টনারশিপ ডায়ালগ’-এর তারিখ চ‚ড়ান্ত করতে ক’ মাস ধরে করতে ঢাকা-ওয়াশিংটন চিঠি চালাচালি চলছিল। এ বছরের জানুয়ারিতে সংলাপটি হতে পারে মর্মে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে সবুজ সংকেত মিলেছিল। কিন্তু ওয়াশিংটন তা পিছিয়ে দিতে ঢাকাকে অনুরোধ করে। সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংলাপটি পিছিয়ে ফেব্রæয়ারি বা মার্চে করার চিন্তাভাবনা চলে। সূত্র মতে, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ বা ২০ তারিখ পার্টনারশিপ ডায়ালগ হতে পারে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দুই দেশের আনুষ্ঠানিক আলোচনার সর্বোচ্চ প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে এই পার্টনারশিপ ডায়ালগ। এখানে গুরুত্বপূর্ণ, বিতর্কিত, অবিতর্কিত সব বিষয় নিয়েই খোলামেলা আলোচনা হয়। সন্ত্রাসবাদ দমন, কোভিড সহযোগিতাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দুই দেশের যে পার্থক্য, সেসব নিয়ে আলোচনার সুযোগ তৈরি হবে। এ ধরনের আলোচনায় দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নের পাশাপাশি নীতি প্রণয়ন করা হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে উভয় দেশের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়।

এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আমাদের আলোচনা হয়। প্রতিবছর পার্টনারশিপ ডায়ালগ হয়ে থাকে। করোনার কারণে গতবার হয়নি। এবার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেখানে আমাদের দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয় আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, আপাতত যাচ্ছি না। যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণ পেলে সেটাকে অ্যাকোমোডেটেড করার চেষ্টা করি আমরা।

সূত্র জানায়, পার্টনারশিপ ডায়ালগে স্পর্শকাতর সব বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে যে উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে সেই আলোচনা অবধারিতভাবে আসতে পারে পার্টনারশিপ ডায়ালগে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এছাড়া সম্প্রতি র‌্যাবের ৭ সদস্যের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে সেটি আলোচনায় আসলে বাংলাদেশ তার অবস্থান ব্যাখ্যা করবে। উল্লেখ্য, গত ছয় বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ প্রায় ৬৫০ কোটি (প্রায় সাড়ে ৭ কোটি ডলার) টাকার সামরিক অনুদান পেয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ফরেন মিলিটারি ফাইন্যান্সিং এবং আন্তর্জাতিক মিলিটারি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। ওই টাকার একটি বড় অংশ বঙ্গোপসাগরে মার্কিন যে উদ্যোগ রয়েছে সেটা শক্তিশালী করতেও বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877